দাম বাড়ার খবরে সিলেটে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। গত দুই দিন থেকে সিলেটের এলপিজি গ্যাসের পাইকারি বিক্রেতারা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। এমনকি অধিক লাভের আশায় একই পথে হাঁটছেন খুচরা বিক্রেতারাও। পাইকারি দরে ক্রয় করে মজুত করে রাখছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার খুচরা বিক্রিও বন্ধ করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ইস্যু করে দাম বাড়ার ‘সংকেত’ পেয়ে গত দুই দিন থেকে সিলেট নগরীতে এলপিজি গ্যাস বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অধিক লাভের আশায় কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করছেন তারা। অন্যদিকে মজুত করে রাখতে চাহিদার বেশি এলপিজি গ্যাস ক্রয় করা শুরু করেছেন খুচরা বিক্রেতারা। অনেকে আবার খুচরা বিক্রিও বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে বিভিন্ন দোকানে গ্রাহকরা খুচরাতেও এলপিজি গ্যাস পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে নগরীতে প্রতি এলপিজি বোতলের দাম ১০০-১৫০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
সিলেট নগরীর কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রতি বোতল এলপিজি গ্যাস ১৩০০ থেকে ১৩৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে দুই দিন আগে ১২০০ থেকে ১২৫০ টাকা করে বিক্রি হতো। হঠাৎ করে দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, সিলেটে এলপিজি গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দেশে এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়তে পারে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একটি সিন্ডিকেট সিলেটে এলপিজি গ্যাসের পাইকারি বৃদ্ধি বন্ধ করে দিয়েছে। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ওই সিন্ডিকেট গ্যাস পাইকারি দরে বিক্রি করছে না।
এ ব্যাপারে এলপিজির বিভিন্ন কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর ও বিএইচডি এন্টারপ্রাইজের মালিক আলী হোসেন বলেন, একেবারেই বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। কোম্পানিগুলো আমাদেরকেই গ্যাস কম সরবরাহ করছে। তাই রিটেলাইরদের চাহিদামতো আমরা দিতে পারছি না।
এ প্রসঙ্গে মেঘনা গ্রুপের কোম্পানি ফ্রেশ এলপিজির ডিস্ট্রিক্ট এর সেলস ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা চাহিদা অনুযায়ী বিদেশ থেকে লিকুইড এনে থাকি। মাঝেমধ্যে চাহিদা বাড়লে গ্যাসের একটু ঘাটতি পড়ে। তবে তীব্র সংকট কখনোই তৈরি হয় না। সোমবার রাতে নতুন করে এলপিজির দাম নির্ধারিত হবে। দাম কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর বা রিটেইলাররা। দাম বাড়ার খবরে তারা প্রত্যেকেই মজুত করতে চান, যাতে দাম বাড়লে দুই পয়সা বেশি লাভ করা যায়।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হলে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।